৫ই আগস্ট ফ্যাসিবাদের পতনের পর দেশ ও রাষ্ট্রের সর্বত্রই সংস্কার শুরু হলেও নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলায়, বিশেষ করে তমরদ্দি ইউনিয়ন এলাকায় বহুল পরিচিত ভূমিদস্যু দিদার গং এখন রয়ে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
১৯৯৪ সাল থেকে সরকার পরিবর্তন যতবারই হয়েছে, দিদার গং তাদের খোলস পাল্টেছে। এলাকার ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যান, ভূমি অফিস, এসি ল্যান্ড অফিস, এবং সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ, শালিসী পরিষদ ইত্যাদি সব কিছুকে ম্যানেজ করে আসছে, ধর্মকর্ম ও সমাজসেবার আড়ালে।
মরহুম সুলতান আহমদ সওদারের ২য় পরিবারের ৫ ভাইবোনের সম্পত্তি আত্মসাৎ ও জবরদখল করে আসছে দিদার ও তার সহযোগীরা। প্রায় ২৪ একর সম্পত্তি থেকে বছরে প্রায় ৫ লাখ টাকার মতো আত্মসাৎ করে আসছে। যে দুটি প্রধান কারণে ভূমিদস্যু দিদার ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় তা প্রধানত দুটি। প্রথমত, জালিয়াতিপূর্ণ খতিয়ান সৃজন এবং দ্বিতীয়ত, ধর্মকর্ম ও সামাজিক কাজের আড়ালে নিজেদের মুখোশ ঢেকে অর্থবিত্তের মাধ্যমে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে রাখা।
জালিয়াতির মাধ্যমে খতিয়ান সৃজন করে তার মৃত বড় ভাই মোশারফের নামে খতিয়ান তৈরি করে, বিপুল সম্পত্তিকে আইনি ভাবে নিজেদের করে নেয়। তারপর তা দিদার দখল করে প্রতি মৌসুমে ৫-৭ লাখ টাকার গাছপালা, মাছ, ফলফসল আত্মসাৎ করে। এই কাজে তাকে সহায়তা করে তার বড় ভাই আবুল বাশার। এবং আইনি খতিয়ানের দিক থেকে দিদারের ২ ভাগ্নে— মাসুদ ও রায়হান, তার ভাবী রোকেয়া। রায়হান পেশায় একজন পুলিশ সদস্য। রেকর্ড ও স্থলভিত্তিক ওয়ারিশ হিসেবে নিজেদের মালিক দেখিয়ে দিদারকে পেছন থেকে সহযোগিতা করছে তারা।
ভূমিদস্যু দিদার
ভূমিদস্যু দিদারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগী হিসেবে তারা আত্মসাৎকৃত অংশের একটি বড় অংশের ভাগীদার হয়। কিন্তু তারা সামনে আসে না। বরং প্রকৃত মালিকদের দাবির মুখে বারবার রেকর্ড সংশোধন করার ব্যবস্থা করবে বলে দীর্ঘ ২৪ বছর যাবত সময় ক্ষেপণ করে আসছে।
এই বিপুল সম্পত্তির দলিলপত্র বাশারের সহযোগিতায় সম্পূর্ণ লুকিয়ে ফেলা হয়েছে। ফলে দাগ, খতিয়ান নম্বর ইত্যাদি সংগ্রহ ও উত্তোলন করা প্রকৃত মালিকদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। এবং দীর্ঘ আইনি সালিশি লড়াইয়ে গিয়ে তারা হুমকির মুখে পড়লেও বর্তমান সংস্কারের সময়ে সরকার, মানবাধিকার সংস্থা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজরে বিষয়টি আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এ সংক্রান্ত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সমূহ:
ভূমি দস্যুর সহযোগী কথিত এক ইসলামপন্থী
নালিশী ভূমির বাড়ী অংশের কিছু ছবি
দখলকৃত সম্পত্তির কিছু অংশের ভিডিও