Skip to Content

২০১৪ এর বিতর্কিত ও অবৈধ জাতীয় নির্বাচন নয় – একটি বিশ্লেষণ

ফলাফল:

  • মোট আসন: ৩০০
  • বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী আসন: ১৫৩
  • আওয়ামী লীগ (আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্র দল): ২৩৫ আসনে জয়ী (অধিকাংশ আসন ছিল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়)
  • বিএনপি: ০ (বিরোধী দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি)  

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, যা রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত বিতর্কিত ছিল। এই নির্বাচন নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষত এর বৈধতা, অংশগ্রহণমূলকতা, এবং দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উপর এর প্রভাব নিয়ে। বিএনপি ও তাদের নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট নির্বাচন বর্জন করায় এই নির্বাচনকে অনেকেই "একতরফা" এবং "গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকারক" হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

নির্বাচন বর্জনের পটভূমি

২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে তৎকালীন বিরোধী দল বিএনপি ও তাদের জোট নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে। এই বিতর্কিত সিদ্ধান্তের ফলে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দেয়। তাদের দাবি ছিল যে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া অসম্ভব।

একতরফা নির্বাচন ও ফলাফল

বিএনপিসহ প্রধান বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় আওয়ামী লীগ এবং তাদের মিত্র দলগুলো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অনেক আসনে বিজয় লাভ করে। মোট ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। এর ফলে আওয়ামী লীগ সরকার আবার ক্ষমতায় আসে। তবে, এই নির্বাচনের অংশগ্রহণমূলকতা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও সমালোচনা করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো প্রভাবশালী দেশগুলো এই নির্বাচনকে "অংশগ্রহণহীন" হিসেবে আখ্যা দেয় এবং ফলাফল মেনে নেওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানায়।

বিতর্ক ও গণতন্ত্রের ক্ষতি

এই নির্বাচন গণতন্ত্রের জন্য এক অন্ধকার অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য। তবে, ২০১৪ সালের নির্বাচনের ক্ষেত্রে সে ধরনের পরিবেশ ছিল না। নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পেছনে যে কারণগুলো উঠে এসেছে সেগুলো হলো:

জনগণের মতামতের অভাব: অংশগ্রহণহীন একটি নির্বাচন জনগণের প্রকৃত মতামত প্রতিফলিত করতে পারে না। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় ভোটারদের উপস্থিতিও ছিল কম।

অস্থির রাজনৈতিক পরিবেশ: নির্বাচন পূর্ব সময়ে দেশে হরতাল, অবরোধ, এবং সহিংসতা ছিল সাধারণ ঘটনা। এর ফলে রাজনৈতিক পরিবেশ আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বেশিরভাগই এই নির্বাচনকে গণতন্ত্রের জন্য অবনতি বলে চিহ্নিত করেছে। এতে বাংলাদেশের বৈশ্বিক অবস্থান কিছুটা দুর্বল হয়েছে।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন, নৈতিক এবং গণতান্ত্রিক দিক থেকে এটি একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করেছে। বিরোধী দলগুলোর অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে ভবিষ্যতে এমন নির্বাচন এড়িয়ে অংশগ্রহণমূলক এবং স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।

২০১৮ সালে ভোট চুরির মাধ্যমে অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ