Skip to Content

সংস্কার প্রস্তাব সমূহ

প্রস্তাব-১

বাংলাদেশে শিশুদের কল্যাণ সেবা: রাষ্ট্রের অভিভাবকত্ব নিশ্চিতকরণে সংবিধান সংস্কারের প্রস্তাব


শিশুরা একটি জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের সুরক্ষা, পুষ্টি, শিক্ষা এবং মৌলিক চাহিদা পূরণের দায়িত্ব মূলত পরিবারের, তবে সমাজ ও রাষ্ট্রেরও বড় ভূমিকা রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক দরিদ্র পরিবার তাদের সন্তানের মৌলিক চাহিদা পূরণে অক্ষম, যা শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। তাই, বাংলাদেশের সংবিধানে একটি নতুন ধারার প্রস্তাবনা তোলা হচ্ছে, যা রাষ্ট্রকে দরিদ্র পরিবারের শিশুদের অভিভাবকত্ব গ্রহণের ক্ষমতা ও দায়িত্ব প্রদান করবে। এই প্রস্তাবনার লক্ষ্য হল, শিশুদের জন্য একটি সুরক্ষিত, সুস্থ এবং সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা।

রাষ্ট্রের অভিভাবকত্বের ধারণা

প্রস্তাবিত ধারায় বলা হচ্ছে, দরিদ্র ও বেকার পরিবারের সন্তানদের জন্য রাষ্ট্রকে একজন "অভিভাবক" হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এর মাধ্যমে, যারা অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল ও অভাবগ্রস্ত, তাদের সন্তানদের জন্য রাষ্ট্র বিনামূল্যে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান এবং স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করবে। অভিভাবকের অনুপস্থিতিতে বা তাদের অক্ষমতার সময়ে রাষ্ট্রই হবে শিশুদের প্রধান সহায়ক ও রক্ষাকর্তা।

মৌলিক অধিকারগুলোর নিশ্চয়তা:

অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থান

প্রতিটি শিশুর জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাদ্যের ব্যবস্থা করা হবে। দরিদ্র পরিবারের শিশুরা যাতে খাদ্যাভাবে ভোগান্তির শিকার না হয়, সেজন্য রাষ্ট্র "চাইল্ড ওয়েলফেয়ার সেন্টার" স্থাপন করবে। এসব কেন্দ্রে প্রতিদিন স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। শিশুদের জন্য মৌসুমী পোশাক ও নিরাপদ বাসস্থানের ব্যবস্থাও করা হবে।

স্বাস্থ্যসেবা

শিশুরা তাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে চিকিৎসা সুবিধা পাবে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা প্রদান এবং মানসিক স্বাস্থ্যের যত্নে বিশেষজ্ঞ মনোবিজ্ঞানী নিয়োগ দেয়া হবে। এই স্বাস্থ্যসেবা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এবং সহজলভ্য হবে।

সেবা প্রদান ও কর্মপদ্ধতি:

চাইল্ড ওয়েলফেয়ার সেন্টার স্থাপন

প্রত্যেক উপজেলায় একটি "চাইল্ড ওয়েলফেয়ার সেন্টার" স্থাপন করা হবে। এসব কেন্দ্রে দরিদ্র ও বেকার পরিবারের শিশুদের জন্য শিক্ষা, পুষ্টি, স্বাস্থ্যসেবা এবং মানসিক সহায়তার ব্যবস্থা থাকবে। শিক্ষাবৃত্তি ও কর্মশালা আয়োজনের মাধ্যমে শিশুদের দক্ষতা বিকাশের উপরও গুরুত্ব দেয়া হবে।

নিরীক্ষণ ও যাচাই প্রক্রিয়া

একের অধিক সেবা প্রদানকারী কমিটি গঠন করা হবে, যা দরিদ্র পরিবারগুলোর আর্থিক অবস্থা যাচাই করবে এবং কোন কোন শিশুদের সেবা পাওয়ার যোগ্য তা নির্ধারণ করবে। এই কমিটি অভিভাবকদের আর্থিক অবস্থার বিশ্লেষণ করবে এবং যাদের সন্তানেরা মৌলিক চাহিদা পূরণে বঞ্চিত, তাদের জন্য রাষ্ট্রের অভিভাবকত্ব নিশ্চিত করবে।

অর্থায়ন ও বাজেট বরাদ্দ:

অর্থায়নের উৎস

রাষ্ট্রের বাজেটের একটি নির্দিষ্ট অংশ শিশুদের কল্যাণে বরাদ্দ করা হবে। এর বাইরে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করা হবে। চাইল্ড ওয়েলফেয়ার সেন্টারগুলির কার্যক্রমের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল নিশ্চিত করা হবে, যাতে দরিদ্র পরিবারের শিশুরা দীর্ঘমেয়াদী সেবা পায়।

সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের অধীনে অন্তর্ভুক্তি

চাইল্ড ওয়েলফেয়ার সার্ভিসকে একটি সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প হিসেবে বিবেচনা করে, এটি দেশের সামাজিক সুরক্ষা নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এতে করে শিশুদের কল্যাণে দীর্ঘমেয়াদী সহায়তা নিশ্চিত করা যাবে।

আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন:

শিশু কল্যাণ আইন

শিশুদের সুরক্ষা এবং কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য একটি বিশেষ আইন প্রণয়ন করা হবে। এই আইনটিতে শিশুদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে এবং রাষ্ট্রের অভিভাবকত্বের দায়িত্ব স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হবে। শিশুদের উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য নির্দিষ্ট পদক্ষেপগুলি আইনসম্মতভাবে পরিচালিত হবে।

উদাহরণ ও অন্যান্য দেশের মডেল:

উন্নত দেশের উদাহরণ

বিভিন্ন উন্নত দেশ যেমন নরওয়ে, সুইডেন, এবং ফিনল্যান্ডে শিশুদের কল্যাণে রাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই দেশগুলিতে, দরিদ্র ও বেকার পরিবারগুলোর সন্তানদের জন্য রাষ্ট্র বিনামূল্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং মানসিক সহায়তার ব্যবস্থা করে থাকে। বাংলাদেশের প্রস্তাবিত মডেলও এসব দেশগুলির সাফল্য অনুসরণ করবে।


বাংলাদেশে দরিদ্রতার কারণে অনেক শিশু তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এই প্রস্তাবিত সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে রাষ্ট্রের দায়িত্ব বাড়ানো এবং শিশুদের প্রতি আরও যত্নবান হওয়া সম্ভব হবে। সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত অংশের জন্য উন্নত সেবা এবং সুযোগ নিশ্চিত করা মানেই দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা। এটি শুধু একটি মানবিক উদ্যোগ নয়, বরং এটি একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

সাধারণ মানুষের ভূমিকা

এই প্রস্তাবিত সংবিধান সংস্কার বাস্তবায়নে সাধারণ মানুষের সচেতনতা এবং সমর্থন অত্যন্ত জরুরি। রাষ্ট্রের দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা এবং শিশুদের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু যেন উন্নত, শিক্ষিত এবং সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ পায়, সেটিই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।

এই প্রস্তাবিত পরিবর্তন বাস্তবায়িত হলে, বাংলাদেশ একটি মানবিক ও উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে।


প্রস্তাব-২

নারীর প্রতি সহিংসতার জন্য ডাটাবেজ তৈরি এবং ভোটাধিকার ও স্বাক্ষরাধিকার রহিতকরণ

নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করার জন্য কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। এ প্রস্তাবের আওতায়, নারীর প্রতি সহিংসতায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ তৈরি করা হবে। এতে অভিযুক্ত এবং দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের নাম, অপরাধের বিবরণ এবং শাস্তির তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই ডাটাবেজটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে, যাতে সকলেই এদের বিষয়ে সচেতন থাকতে পারে। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো, নারীর প্রতি সহিংসতায় দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের ভোটাধিকার এবং সরকারি বা আইনি নথিতে স্বাক্ষর দেওয়ার অধিকার রহিত করা। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে, সহিংসতাকারীদের সামাজিক এবং আইনগতভাবে চাপে রাখা হবে এবং তাদের অপরাধকে সহ্য না করার বার্তা প্রেরণ করা হবে।

প্রস্তাব-৩

কোরআন ও সুন্নাহ ভিত্তিক পোশাক সম্পর্কিত আইন প্রণয়ন

বাংলাদেশে ইসলামি মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার জন্য কোরআন ও সুন্নাহ ভিত্তিক একটি পোশাক আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করা হচ্ছে। এই আইনের আওতায়, প্রকাশ্যে এমন কোনো পোশাক পরা যাবে না যা অশালীন বা সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের বিরুদ্ধে যায়। এতে হাফ প্যান্ট, অশ্লীল বা নগ্ন পোশাক, বুক বা পিঠ উন্মুক্ত রাখে এমন পোশাক এবং আকর্ষণহীন বা বিদঘুটে মনে হয় এমন পোশাক নিষিদ্ধ থাকবে। এর লক্ষ্য হলো, সমাজে শালীনতা ও সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং দেশের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা। আইন লঙ্ঘনকারীদের জন্য যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হবে যাতে সমাজে একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ পরিবেশ বজায় থাকে।

প্রস্তাব-৪

কমন সিকিউরিটি ফান্ড গঠন ও ফোর্স প্রতিষ্ঠা

বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর নিরাপত্তা এবং সামরিক শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি কমন সিকিউরিটি ফান্ড গঠনের প্রস্তাব করা হচ্ছে। তুরস্ক এবং ইরানের সহায়তায় এই ফান্ড গঠন করা হবে এবং এতে সকল মুসলিম দেশ সমান অংশীদার হিসেবে যুক্ত হবে। এই ফান্ডের অধীনে একটি সাধারণ নিরাপত্তা বাহিনী (কমন ফোর্স) তৈরি করা হবে, যা মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য বৃদ্ধি পাবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাদের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। এটি মুসলিম বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।

প্রস্তাব-৫

সকল মন্ত্রণালয়ের আয় ব্যয়ের তথ্য অনলাইনে প্রকাশ করা

সততা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে, সকল সরকারি মন্ত্রণালয়ের আয় ও ব্যয়ের তথ্য অনলাইনে উন্মুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে, জনগণ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সম্পর্কে সচেতন হতে পারবে এবং সরকারের ব্যয়ের বিষয়ে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যাবে। এই উদ্যোগটি দুর্নীতি হ্রাস করতে সহায়ক হবে এবং জনসাধারণের আস্থা বাড়াতে সহায়তা করবে। মন্ত্রণালয়ের আয়-ব্যয় সম্পর্কিত তথ্য একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত হবে, যা সহজে সবাই অ্যাক্সেস করতে পারবে। এতে করে সরকারি অর্থের যথাযথ ব্যবহার এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বাড়বে।

প্রস্তাব-৬

দখল ভিত্তিতে জমির মালিকানা আইন বাতিলকরণ

বর্তমানে দখল ভিত্তিতে জমির মালিকানা অর্জন করার প্রচলিত পদ্ধতি আইনি ও সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি করছে। এই প্রস্তাবের অধীনে, জমির মালিকানা অর্জনে দখল পদ্ধতি বাতিল করা হবে এবং একটি সুষ্ঠু ও ন্যায়সংগত জমি বন্টন পদ্ধতি চালু করা হবে। এতে জমির মালিকানার ক্ষেত্রে স্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে যাতে অবৈধ দখলদারিত্ব ও জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ এড়ানো যায়। নতুন নীতিমালার মাধ্যমে জমির মালিকানার বৈধতা প্রমাণ করতে যথাযথ কাগজপত্র এবং সরকারি দলিলের প্রয়োজন হবে। এর ফলে জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ ও সংঘাত হ্রাস পাবে এবং দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে।

প্রস্তাব-৭

অনলাইন মনিটরিংয়ের মাধ্যমে দলিল, পাসপোর্ট এবং অন্যান্য সরকারি তথ্য সংশোধন করা

বর্তমানে দলিল, পাসপোর্ট এবং অন্যান্য সরকারি তথ্য সংশোধন করতে অনেক জটিল প্রক্রিয়ার সম্মুখীন হতে হয়। তাই, একটি সহজ ও স্বচ্ছ পদ্ধতির জন্য অনলাইন মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করা হবে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে, নাগরিকরা তাদের দলিল, পাসপোর্ট এবং অন্যান্য সরকারি তথ্য সংশোধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন এবং সংশোধন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। এই অনলাইন সিস্টেমের মাধ্যমে, কোন আবেদন কোথায় আছে, কী অবস্থায় আছে তা সহজেই জানা যাবে, যা প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত এবং স্বচ্ছ করে তুলবে। এতে জনগণের সময় বাঁচবে এবং সরকারী কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধি পাবে।

প্রস্তাব-৮

কুরআন বহির্ভূত ও ভিত্তিহীন বিষয়ের অন্তর্ভুক্তি: শিক্ষার্থীদের উপর নেতিবাচক প্রভাব

বর্তমানে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় কিছু বিষয় এবং উপাদান রয়েছে যা কুরআনের শিক্ষার সাথে সাংঘর্ষিক বা অসঙ্গতিপূর্ণ। এমন কিছু বিষয় এবং ধারণা শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যা তাদের মনন গঠনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এই ধরনের অসার এবং আজগুবি বিষয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে দ্বিধা সৃষ্টি করতে পারে এবং তাদের ধর্ম সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেতে বাধা দেয়। অধিকাংশ সময় দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা এসব বিষয়ের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ থেকে দূরে সরে যায় এবং এমনকি তাদের মধ্যে ধর্ম সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাবের উদ্ভব ঘটে। পশ্চিমা শিক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অনেকেই ধর্মবিদ্বেষী হয়ে ওঠে, যা পরবর্তী জীবনে ধর্মের প্রতি অনীহা এবং এমনকি নাস্তিকতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। ফলে, কুরআন ভিত্তিক শিক্ষার অভাব তাদের চারিত্রিক ও নৈতিক গঠনকে দুর্বল করে দেয় এবং তারা সহজেই ধর্মীয় অনুভূতি ও মূল্যবোধ থেকে বিচ্যুত হয়।

প্রস্তাব-৯

কুরআন ভিত্তিক একটি শিক্ষাক্রমের ইতিবাচক প্রভাব: শিক্ষা ও নৈতিকতার গঠন

কুরআন ভিত্তিক একটি শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঠিক ধর্মীয় জ্ঞান, নৈতিকতা এবং মূল্যবোধ গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। ইসলামের মূল শিক্ষা কুরআন ও সুন্নাহর উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে, যা সত্য, ন্যায়, সৎচরিত্র এবং মানবতার উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি কুরআন ভিত্তিক শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে নৈতিক ও ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। এটি তাদের শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। কুরআন ভিত্তিক শিক্ষা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সততা, ন্যায়পরায়ণতা, দায়িত্ববোধ এবং মানবিক গুণাবলি জাগ্রত করতে পারে, যা একটি সুস্থ এবং সুষ্ঠু সমাজ গঠনে সহায়ক। ধর্মীয় জ্ঞান ও নৈতিকতা তাদেরকে ভবিষ্যতে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে প্রস্তুত করবে এবং তাদের জীবনে একটি শক্তিশালী নৈতিক ভিত্তি তৈরি করবে। এছাড়া, কুরআন ভিত্তিক শিক্ষা তাদের মধ্যে ঐশ্বরিক এবং মানবিক গুণাবলির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত করবে এবং সমাজে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে।

এর মাধ্যমে, শিশুদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস, দায়িত্ববোধ, এবং সঠিক মূল্যবোধ গড়ে উঠবে যা পরবর্তী জীবনে তাদেরকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা প্রদান করবে। কুরআন ভিত্তিক শিক্ষা একটি নৈতিক সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, যেখানে মানুষ সৎ, দায়িত্বশীল এবং অপরাধমুক্ত জীবনযাপন করবে।

লেখক: তৌফিক হাসান ও মনিরা চৌধুরী

সরকারব্যবস্থা, সংসদ ও নির্বাচন বিষয়ক প্রস্তাব