বিশ্ব সম্প্রদায় গাজার সংঘাত থামানোর জন্য ইসরাইলের সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপ পুনরায় শুরুর দাবি জানিয়েছে। এদিকে, ইসরাইলের অধিকৃত গাজা উপত্যকার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোস্তফা ফিলিস্তিনে ব্যাপক প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক, এবং সরকারি পরিষেবা সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন।
পশ্চিম তীরের রামাল্লায় নিজের কার্যালয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে মোহাম্মদ মোস্তফা বলেন, প্রশাসনিক দুর্নীতি রোধ, বিচার ব্যবস্থার সংস্কার, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং সরকারি কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা পরিষেবার উন্নয়ন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শক্তিশালীকরণ বিষয়ে তার সরকার শিগগিরই নতুন পদক্ষেপ নেবে।
ফিলিস্তিনের তিন ভূখণ্ড—গাজা, পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেম—এখনো বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে বিভক্ত। গাজায় হামাস এবং পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ফাতাহের নেতৃত্বাধীন প্যালেস্টাইনিয়ান অথরিটি (পিএ) শাসন করছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পিএ-কে বৈধ শাসক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
মোহাম্মদ মোস্তফা ১৫ মার্চ পিএ প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান, তার পূর্বসূরি মোহাম্মদ শাতায়েহের পদত্যাগের পর। শাতায়েহ, যিনি ফিলিস্তিনে ইসরাইল ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপ শুরু করার জন্য গঠিত প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন, তার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী পদ ছাড়েন।
২০০৭ সালে হামাস গাজায় ক্ষমতা দখল করার পর পিএ জোটকে উৎখাত করে, এবং তখন থেকেই হামাস আন্তর্জাতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য হয়ে পড়ে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে। যদিও মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার বেশ কিছু দেশ এখনও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করেনি, তবে তারা সর্বদা হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক থেকে দূরে থাকে।
গাজার বর্তমান পরিস্থিতি এবং ৭ অক্টোবরের হামাস-ইসরাইল সংঘাতের পর ইসরাইল ও পশ্চিমা বিশ্ব গাজার প্রশাসন পরিচালনার জন্য পিএ সরকারের পুনঃপ্রতিষ্ঠা চায়। তবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, পিএ জোট গাজা শাসন করার মতো সক্ষমতা রাখে না, বিশেষ করে চলমান অর্থনৈতিক সংকটের কারণে। পশ্চিম তীরের পিএ সরকারও বর্তমানে গভীর অর্থনৈতিক সঙ্কটে রয়েছে, এবং গাজায় হামাসের সঙ্গে গোপন সম্পর্কের অভিযোগে ইসরাইল তাদের ওপর আর্থিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।