এক গ্রামে ছিল দুজন বুদ্ধিমান মানুষ—একজনের নাম ছিল গব্বু, আরেকজনের নাম ছিল টুকটুকি। তবে বুদ্ধির প্রয়োগে দু’জনের পার্থক্য ছিল আকাশ-পাতাল। গব্বু ছিল এমন এক বুদ্ধিমান যে নিজের বুদ্ধি দিয়ে সব গুবলেট পাকিয়ে ফেলত, আর টুকটুকি ছিল হাস্যকর পরিস্থিতি সামাল দিয়ে বুদ্ধি দেখাতে ওস্তাদ।
একদিন গ্রামে ঘোষণা এল, “যে সবচেয়ে বুদ্ধিমান সে রাজ্যের রাজা হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।”
গব্বু ভাবল, “এবার সবাইকে দেখিয়ে দেব আমি কত বড়ো বুদ্ধিমান!”
আর টুকটুকি বলল, “এই সুযোগে একটু মজা করা যাক!”
পরীক্ষার দিন দুই বন্ধু হাজির। বিচারক প্রথম প্রশ্ন করলেন:
“তোমরা যদি জঙ্গলে একা থাকো আর তোমার সামনে সিংহ এসে যায়, তখন কী করবে?”
গব্বু গম্ভীর মুখে বলল, “আমি সিংহের সঙ্গে বন্ধুত্ব করব। তারপর তাকে রাজা বানিয়ে দেব, আর সে আমাকে রক্ষা করবে।”
বিচারক অবাক হয়ে বললেন, “অবশ্যই বুদ্ধিমান উত্তর!”
টুকটুকি হাসিমুখে বলল, “আমি দৌড়ে গিয়ে একটা গাছে উঠব। সিংহ যদি গাছে উঠতে চায়, তাকে বলব, ‘এত বড় বুদ্ধিমান হয়ে নীচে দাঁড়িয়ে আছ কেন? গাছে ওঠো!’”
বিচারক হাসতে হাসতে বললেন, “কী মজার উত্তর!”
পরের প্রশ্ন এল:
“যদি তোমাদের কাছে একটা সোনার ডিম দেওয়া হয়, সেটা কীভাবে ব্যবহার করবে?”
গব্বু বলল, “আমি ডিমটি বিক্রি করে পুরো একটা স্বর্ণের খনি কিনব।”
টুকটুকি বলল, “আমি ডিম ফেলে দেব!”
বিচারক অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “ফেলে দেবে কেন?”
টুকটুকি বলল, “কারণ আমি জানি, এই ডিম দিয়ে কিছুই হবে না। যদি ডিম সত্যি সোনার হতো, তা হলে এখন আমার সামনে সোনার মুরগি থাকত!”
পুরো গ্রাম হাসিতে ফেটে পড়ল।
পরীক্ষা শেষে বিচারক ঘোষণা করলেন, “রাজ্যের সেরা বুদ্ধিমান হলো টুকটুকি, কারণ সে শুধু বুদ্ধিমান নয়, মানুষকে হাসাতেও জানে!”
গব্বু মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলল, “এত চেষ্টা করেও হেরে গেলাম! কিন্তু টুকটুকির মতো বুদ্ধি তো আর শিখতে পারব না।”
সেদিন থেকে গ্রামে টুকটুকির নাম হয়ে গেল ‘হাস্যবুদ্ধি টুকটুকি’, আর গব্বু থেকে গেল গব্বর!